রাজধানীতে মিথ্যে মামলায় হয়রানির অভিযোগ
- প্রকাশের সময় : ০১:১৮:৪৬ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৪ অক্টোবর ২০২৪ ৮২ বার পঠিত
স্বাধীনবাংলা, স্টাফ রির্পোটারঃ
ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের (ডিএসসিসি) বিএনপি সমর্থিত সাবেক ওয়ার্ড কাউন্সিলর ( সাবেক ৫২, বর্তমান ১৮ নাম্বার ওয়ার্ড) মোতাহার হোসেন জাহাঙ্গীর আওয়ামীলীগ সরকারের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত বিভিন্ন ভাবে নির্যাতনের শিকার হয়েছেন । আওয়ামীলীগের মন্ত্রী, এমপি ও নেতাকর্মীদের অত্যাচার, নির্যাতন এবং মামলায় অতিষ্ঠ হয়ে এক পর্যায়ে দেশ ত্যাগ করতে বাধ্য হন তিনি। এখনো তার ছোট ভাই মোয়াজ্জেম হোসেন আলমগীর সাবেক সরকারের বিভিন্ন সন্ত্রাসী ক্যাডার দিয়ে বিভিন্নভাবে হয়রানি করে আসছে এমন অভিযোগ করেন সাবেক এই বিএনপি ওয়ার্ড কাউন্সিলর মোতাহার হোসেন জাহাঙ্গীর।
ভয় ভীতি ও মামলা দিয়ে মোতাহার হোসেন জাহাঙ্গীরের পরিবারকে কোনঠাসা করে রাখা হয়েছে। রাজনৈতিক ভাবে সাবেক স্বৈরাচারী সরকারের আমলে তাকে বিভিন্ন নির্যাতন ও মামলায় জড়-জড়িত করে রাখা হয়।
জাহাঙ্গীর জানান, আমি বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের বিভিন্ন অঙ্গ সংগঠনের সঙ্গে জড়িত হয়ে দেশ-বিদেশে বিভিন্ন পদবি অর্জন করি।
তিনি গণমাধ্যমকে জানান, আমি গত ২০০৯ সালে মুন্সিগঞ্জ জেলার গজারিয়া উপজেলা দলীয় প্রার্থী হিসেবে উপজেলা চেয়ারম্যান পদে নির্বাচন করি। স্থানীয় জনগণ আমাকে ভোট দিয়ে জয়ের দারপ্রান্তে নিয়ে যায়। হঠাৎ করে আওয়ামীলীগের পদপ্রার্থী সমর্থকরা ভোটকেন্দ্রে গিয়ে হামলা, ভাঙচুর ও গুলি ছুড়ে এবং ভোট বানচাল করে। এক পর্যায়ে ভোটকেন্দ্র বন্ধ হয়ে যায়। পরে ঐ বছরেই ১৬ মার্চ পূনঃ নির্বাচন দেওয়া হয়। তখন আওয়ামীলীগ প্রার্থী সমর্থকরা লাঠি, বৈঠা, অস্ত্র-সস্ত্র নিয়ে কেন্দ্র দখল করে নিজেরাই ভোট দিয়ে আওয়ামীলীগ সমর্থিত প্রার্থীকে বিজয়ী ঘোষণা করে।
জাহাঙ্গীর আরোও বলেন, আওয়ামীলীগ সরকারের আমল থেকে আমাকে আমার বাবার পৈত্রিক সম্পত্তি থেকে আমার ছোট ভাই মোয়াজ্জেম হোসেন আলমগীর আওয়ামীলীগের মন্ত্রী,এমপি ও আওয়ামী দলের অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীদের দ্বারা আমাকে সমপত্তি থেকে বিতারিত করে ।
উল্লেখ্য, রাজধানীর কলাবাগান থানাধীন ৯০ নাম্বার সেন্ট্রাল রোডের দুই কাঠা জায়গার উপর ছয় তলা বিশিষ্ট বাড়িটি একাই আত্মসাৎ করার চেষ্টা করে মোয়াজ্জেম হোসেন আলমগীর।
মোতাহার হোসেন জাহাঙ্গীর বলেন, মোয়াজ্জেম হোসেন আলমগীর সাবেক আইন প্রতিমন্ত্রী ও খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলামের যোগসাজসে পুরো বাড়িটি ভোগ দখল ও আত্মসাৎ করে। পাশাপাশি ষড়যন্ত্রমূলক বিভিন্ন মামলা ও প্রাণ নাশের হুমকী দেয়। এছাড়াও পুলিশ প্রশাসন দিয়ে আমাকে গ্রেফতার করার জন্য খোঁজাখুঁজি করতে থাকে। আমি এক পর্যায়ে নিরুপায় হয়ে আমার পরিবারবর্গ নিয়ে বিভিন্ন জায়গায় গোপনে বসবাস করি।
আলমগীর (আমার ছোট ভাই) গত ২০১৭ সালে নিজে বাদী হয়ে আমার ও আমার স্ত্রীর নামে কলাবাগান থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। মামলার মূল উদ্দেশ্য হলো ৯০ নাম্বার সেন্ট্রাল রোড বাড়িটি দখল করা।
আমার পিতা এ কে আহমদ হোসেনের কাছে এ ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি কোন জিডি ও মামলা করি নাই।
এ ব্যাপারে একে আহমদ হোসেন (আমার পিতা) গত ২০১১ সালে ১৩ই ফেব্রুয়ারি একটি হলফনামায় অঙ্গীকার করে গেছেন। তিনি হলফ নামায় বলেছেন, জিডি ও মামলা এসব ভুয়া বানোয়াট ও মিথ্যা। এরপরও ভিত্তিহীন ভাবে মোয়াজ্জেম হোসেন আলমগীর বিভিন্ন প্ররোচনায় আবারো বাড়ির বিষয়ে কোর্টে মামলা দায়ের করেন। দীর্ঘদিন মামলা চলার পর বিজ্ঞ আদালত সবকিছু তদন্ত সাপেক্ষে মামলাটি খারিজ করে দেন। বিজ্ঞ আদালত আরো বলেন, পৈত্রিক সম্পত্তির ওয়ারিশ হিসেবে চারতলার ফ্ল্যাটটি জাহাঙ্গীর বসবাস করবেন ।
এরপর চলতি বছরে ১৮ সেপ্টেম্বর (বুধবার) মোতাহার হোসেন জাহাঙ্গীর বাদী হয়ে বিজ্ঞ নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মোয়াজ্জেম হোসেন আলমগীরের বিরুদ্ধে ফৌজদারী মামলা দায়ের করেন। পিটিশন মামলার নাম্বার ১১১। মামলাটি চলমান রয়েছে ।
ইতিমধ্যে মোয়াজ্জেম হোসেন আলমগীর তার বড় ভাই মোতাহার হোসেন জাহাঙ্গীর সহ তার পরিবারের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রকারী ও হয়রানির মূলক ভাবে বিভিন্ন পত্রিকা ও অনলাইন পোর্টালে নানান ধরনের অপবাদ দিয়ে সংবাদ প্রকাশ করেন ।
মোতাহার হোসেন জাহাঙ্গীর আরো বলেন, ৯১ সালে আমার ছোট ভাই মোয়াজ্জেম হোসেন আলমগীরকে সুইডেন রাষ্ট্রে (প্রবাসে) আমি নিয়ে আসি। পরে আমি আবার বাংলাদেশে আসি। এরপর সাবেক স্বৈরাচারী হাসিনা সরকারের অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে আমি ও আমার পরিবারসহ সুইডেন চলে যাই ।
বর্তমানে মোয়াজ্জেম হোসেন আলমগীর সহ অন্যান্য ভাই-বোনেরা সুইডেন বসবাস করছেন । আমি ও আমার পরিবার সবাই সুইডেনের নাগরিতা পেয়েছি। স্বৈরাচারী হাসিনার পতন হওয়ার পর আবার আমি বাংলাদেশে আসি।
আমার পৈত্রিক সম্পত্তির বাড়িটি আত্মসাৎ করার জন্য মোয়াজ্জেম হোসেন আলমগীর সুইডেন থেকে ষড়যন্ত্রকারীদের দিয়ে একের পর এক ষড়যন্ত্র ও অন্যায় মূলক ভাবে আমাকে ও আমার পরিবারকে বিভিন্ন হেনস্তা করে যাচ্ছে।
পরিবারের অভিযোগে সূত্রে ও মোতাহার হোসেন জাহাঙ্গীর গণমাধ্যমকে বলেন , মোয়াজ্জেম হোসেন আলমগীর দেশ-বিদেশে আন্ডারওয়ার্ল্ডের সাথে এবং বিভিন্ন অপকর্মের সাথে জড়িয়ে থেকে দেশ-বিদেশে ব্যবসা-বাণিজ্য করছেন। তাছাড়াও প্রশাসনকে ফাঁকি দিয়ে দীর্ঘ ১৫ বছর যাবত তার এই অপকর্ম চালিয়ে আসছিল। আমি এইসব হয়রানি থেকে পরিত্রাণ চেয়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা ও পুলিশের উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের কাছে সহযোগিতা কামনা করছি।
এসবিএন